তোমার প্রিয় ঋতু: শরৎকাল প্রবন্ধ রচনা
তোমার প্রিয় ঋতু: শরৎকাল প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা: বর্ষার শেষে আকাশের বুক থেকে কালাে মেঘ বিদায় নেয়। তখন নীল আকাশের বুকে শরতের সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়। এই শরৎকালে আকাশ নীল, গাছপালা সবুজ থাকে। ঋতুচক্রের মধ্যে তৃতীয় ঋতু হচ্ছে শরৎকাল। ভাদ্র ও আশ্বিন মাস নিয়ে শরৎকাল।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঃ শরতে প্রকৃতি এক অপরূপ রূপ ধারণ করে। শরতের রূপে কবি মুগ্ধ হয়ে গেয়েছেন-
“আজি কি তােমার মধুর মুরতি
হেরিনু শারদ প্রভাতে
হে মাতঃ বঙ্গা শ্যামল অঙ্গ
ঝলিছে অমল শােভাতে।”
শরৎকালে নদী-নালা-পুকুর জলভারে টলমল করে। জলাশয়ে বিচিত্র ফুলের সমারােহ। এখানে-সেখানে কাশফুলের গুচ্ছ। সবুজ ধানক্ষেতের বুকে বাতাস ঢেউ তুলে যায়। ঘন নীল আকাশের বুকে সাদা মেঘের ভেলা। ভরা নদীর বুকে দেখা যায় পাল-তােলা নৌকা। শােনা যায় মাঝিদের সারিগান, বাউলের একতারায় আগমনি সুর। শউলির গন্ধে আকাশ-বাতাস ভরে ওঠে। এছাড়া বুনাে লতায় বিচিত্র ফুলের সমারােহ।ৎসকাল বেলায় ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দুর উপর সূর্যরশ্মি পড়ে অপূর্ব সৌন্দর্য সৃষ্টি করে। শরৎকালে জ্যোৎস্না রাত্রি এক অপরূপ রূপ ধারণ করে। নীল আকাশের বুকে পদের উদয় এক স্বর্গীয় জ্যোতিতে ভরিয়ে দেয়।
উৎসবঃ শরৎ উৎসবের ঋতু। প্রকৃতির রূপের মধ্যেই আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয় উৎসবের বাঁশির সুর। আনন্দময়ীর আগমনে বাঙালির হৃদয় আনন্দে ভরে যায়। এই সময় গৌরী বাপের বাড়ি আসেন। বাঙালির আঙিনায় উৎসবের ধুম পড়ে যায়। নতুন নতুন জামা কাপড়ে সেজে বাঙালি প্রাণের আনন্দে মেতে ওঠে। সারা বছর ধরে বাঙালি এই উৎসবটির জন্য প্রতীক্ষা করে থাকে। প্রবাসী বাঙালিরা এই সময় বাড়ি ফেরে। ভ্রমণ বিলাসীরা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে সারা বছরের একঘেয়ে জীবনের ক্লান্তি দূর করতে। সুখের পর বিষাদ—বিজয়া দশমীতে মানুষের মন দুঃখে ভরে যায়। এই ঋতুর অপর দুটি উৎসব—লক্ষ্মীপূজা এবং কালীপূজা। আর আছে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। ভাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করে বােনেরা ভাইয়ের কপালে ফেঁটা দেয় এই দিনটিতে।
উপসংহার : এরপর শরতের বিদায়ের পালা। যে শরতের আগমনে “স্থলে জলে আর গগনে গগনে” “মধুর লগনের বাঁশি বেজেছিল, বিদায় বেলায় শরৎ মানুষের মনে বেদনার স্মৃতি, হৃদয়ে করুণ মূছনা রেখে বিদায় নেয়। বাতাসে হিমেল স্পর্শ অনুভূত হয়।
এই প্রবন্ধের অনুসরণে লেখা যায় -
বঙ্গে শরৎ
তােমার প্রিয় ঋতু
শরতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
আরো পড়ুন- 1. বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ রচনা