অঙ্কুরােদগম কাকে বলে? অঙ্কুরােদগমের বাহ্যিক শর্তগুলি কী কী? এদের সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।
অঙ্কুরােদগম
উত্তরঃ পরিণত ফলের বীজ থেকেই চারাগাছ জন্মে। বীজ থেকে চারাগাছ জন্মানােকে বীজের অঙ্কুরােদগম বলে। পাকা ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পুঁতলে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অঙ্কুরােদ্গম হয় না। কারণ একটা সময় পর্যন্ত শিশু-উদ্ভিদ বীজের ভেতর সুপ্ত অবস্থায় থাকে। এই সময় বীজকে মৃত বলে মনে হলেও এর জীবনীশক্তি বহুদিন অক্ষুন্ন থাকে। উপযুক্ত পরিবেশে পরিমিত জল, উয়তা ও বায়ুর অক্সিজেনের সংস্পর্শে বীজ প্রথমে জল শােষণ করে কেঁপে ওঠে এবং পরে ডিম্বকরন্দ্রের মধ্য দিয়ে ভূণমূল বেরিয়ে আসে। ভ্রূণের এই জাগরণ অর্থাৎ সক্রিয় হয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়াই অঙ্কুরােদগম।
অঙ্কুরােদগমের প্রয়ােজনীয় বাহ্যিক শর্তগুলি হল উষ্ণতা, আর্দ্রতা (জল), বায়ু বা অক্সিজেন বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য।
উপযুক্ত উষ্ণতা: বীজের অঙ্কুরােদ্গমে উপযুক্ত উত্তাপ প্রয়ােজন। বিভিন্ন প্রকারের বীজ বিভিন্ন তাপমাত্রায় অঙ্কুরিত হলেও বেশি উষ্ণতায় বা অত্যধিক ঠাণ্ডায় বীজের অঙ্কুরােদ্গম ব্যাহত হয়। সাধারণ তাপমাত্রায় সকল বীজের অঙ্কুরােদ্গম হয়ে থাকে। সুতরাং অঙ্কুরােদ্গমের উতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহ্য শর্ত।
আর্দ্রতা বা জলঃ বীজের অঙ্কুরােদ্গমের জন্য জল একান্ত প্রয়ােজন। কারণ শুষ্ক অবস্থায় বীজ অঙ্কুরিত হতে পারে না; অর্থাৎ অঙ্কুরােদ্গমে জল অন্যতম প্রধান শর্ত। অঙ্কুরােদ্গমের সময় শুকনাে বীজ প্রচুর পরিমাণে জল শােষণ করে। জল বীজত্বককে নরম করে; ফলে ত্বকটি সহজে ফেটে যায় এবং ভ্রূণটি সহজে বাইরে আসতে পারে। বীজপত্রে বা সস্যে সঞ্চিত অদ্রবণীয় কঠিন খাদ্য জলের সংস্পর্শে সরল ও তরল খাদ্যে পরিণত হয়। জল তরল খাদ্যকে বীজপত্র বা সস্য থেকে ভূণের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।
অক্সিজেন বা বায়ুঃ বীজের নিষ্ক্রিয় দশা থেকে সক্রিয় দশায় উপনীত হওয়াই হল অঙ্কুরােদ্গম। এই সময় ভূণটি দ্রুত বাড়তে থাকে। দ্রুত বাড়ার জন্য অধিক পরিমাণে শক্তির প্রয়ােজন। বীজে সঞ্চিত খাদ্য হতে শ্বসনের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনের জন্য বায়ুর অক্সিজেনের প্রয়ােজন। অক্সিজেনের অভাবে বীজের অঙ্কুরােদ্গম-ক্ষমতা নষ্ট হয়ে বীজ পচে যায়।
আরো পড়তে- 1. তিমির অভিযোজন
3.