সীবেক ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ ও ব্যাখ্যা করো

সীবেক ক্রিয়া ও তার উদাহরণ ও ব্যাখ্যা

সীবেক ক্রিয়া কাকে বলে?
দুটি ভিন্ন ধাতুর দণ্ডকে বা তারকে পারস্পরিক দুই প্রান্তে যুক্ত করে তাপ-যুগ্ম রচনা করলে এবং সংযােগস্থল দুটির মধ্যে স্থায়ী তাপমাত্রা পার্থক্য সৃষ্টি করলে তাপযুগ্মের মধ্য দিয়ে একটি একমুখী তড়িৎপ্রবাহ চালিত হয়। এই ঘটনা 1821 সালে সীবেক লক্ষ্য করেন বলে ইহাকে সীবেক ক্রিয়া বলে।

উদাহরণঃ একটি তামা-লােহা তাপযুগে দুটি সংযােগবিন্দুর মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য 100°C হলে যে তাপীয় তড়িচ্চালক বলের উদ্ভব হয় তার পরিমাণ 0.0013 volt এবং প্রবাহমাত্রার দিক লােহা থেকে তামার দিকে ঠাণ্ডা সংযােগবিন্দুর মধ্য দিয়ে এবং তামা থেকে লােহার দিকে উত্তপ্ত সংযােগবিন্দুর মধ্য দিয়ে।

ইলেকট্রনীয় তত্ত্বানুসারে সীবেক ক্রিয়ার ব্যাখ্যাঃ
ইলেকট্রন তত্ত্ব অনুসারে ধাতুর মধ্যে অসংখ্য মুক্ত ইলেকট্রন আছে এবং মুক্ত ইলেকট্রনগুলি আদর্শ গ্যাসের মত আচরণ করে। ধাতুর মধ্যে ইলেকট্রন গ্যাসের চাপ এবং ঘনত্ব ধাতুর উষ্ণতা এবং ধাতুর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ বিভিন্ন ধাততে ইলেকট্রন গ্যাসের চাপ বিভিন্ন। যখন দুটি বিভিন্ন ধাতুকে তাপযুগে যুক্ত করা হয় তখন ইলেকট্রন বেশী ঘনত্বের ধাতু থেকে কম ঘনত্বের ধাতুতে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় গতিশীল হয়। ফলে দুটি বিভিন্ন ধাতুর সংযােগস্থলের উভয় দিকে তড়িচ্চালক বলের সৃষ্টি হয় এবং একটি তড়িৎক্ষেত্র উৎপন্ন হয় এবং একসময় সাম্যে পৌছায় ও একই তাপমাত্রায় উভয় সংযােগে একই তড়িচ্চালক বলের উদ্ভবের ফলে কোন তড়িৎপ্রবাহ হয় না। কিন্তু সংযােগ বিন্দুর মধ্যে একটি স্থায়ী তাপমাত্রা পার্থক্য সৃষ্টি করলে তাপ-যুগ্ম বর্তনীতে তড়িচ্চালক বলের পার্থক্যের জন্য একমুখী স্থায়ী প্রবাহের সৃষ্টি হয়। এই হ’ল সীবেক ক্রিয়া।

আরো দেখুন-
1. গ্যালভানোমিটার কাকে বলে?
2. ফ্লেমিং এর বামহস্ত সূত্র
3. অ্যামিটার কি? অ্যামিটার ও ভোল্টমিটারের পার্থক্য
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url