অনুসর্গ কাকে বলে? অনুসর্গ ও বিভক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?

অনুসর্গ

অনুসর্গ কাকে বলে?

উত্তর : যে অব্যয়গুলি বিশেষ্য বা সর্বনামপদের পরে বসে বিভক্তির কাজ করে, সেই অব্যয়গুলিকে অনুসর্গ বলে। 
যথা : থেকে, হইতে/হতে, অপেক্ষা, চেয়ে, দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক ইত্যাদি।
অনুসর্গ কে ইংরেজিতে বলে Postposition
বাংলা ভাষায় অনুসর্গ দুই প্রকার।
1. নাম অনুসর্গ: দ্বারা, বিনা, কর্তৃক, ছাড়া ইত্যাদি।
2. ক্রিয়া অনুসর্গ: হইতে/হতে, থাকিয়া/ থেকে, চেয়ে, দিয়ে ইত্যাদি।
ক্রিয়া অনুসর্গগুলি অসমাপিকা ক্রিয়ারূপে থাকে।
অনুসর্গগুলি কিন্তু অব্যয়। বাংলায় অনুসর্গগুলিকে বিভক্তি রূপে ধরা হয়ে থাকে।
বাংলায় অনুসর্গের ব্যবহার সাধারণত করণ, নিমিত্ত, অপাদান ও অধিকরণ কারকে হয়ে থাকে।
যেমন-
করণে: দ্বারা, দিয়া কর্তৃক।
নিমিত্তে: জন্য।
অপাদানে: হইতে, থেকে/থাকিয়া, চেয়ে,নিকট হইতে/নিকটহতে,কাছহইতে/কাছে হতে অপেক্ষা।
অধিকরণেঃ কাছে, নিকটে, মধ্যে, উপরে।

কারক ছাড়া কিছু কিছু অনুসর্গের ব্যবহার দেখা যায়। যেমন—ছাড়া, তবে, বিনা, চেয়ে, উপরে, পানে, পিছে, মাঝারে, পাশে, ব্যতীত, কাছে, ভিন্ন, অধিক, সনে ইত্যাদি।

অনুসর্গের ব্যবহার

করণ কারকঃ নেতাজী কর্তৃক আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠিত হয়েছিল।
হাত দিয়া লেখাে। 
আমার দ্বারা একাজ হবে না।
নিমিত্ত কারকঃ তনুর জন্য আমি এই ক্যামেরাটি কিনেছি।
অপাদান কারকঃ প্রাণের চেয়ে মান বড়াে।
গাছ হইতে ফল পড়ে।
অধিকরণ কারকঃ গ্রামের নিকটেই নদী।
সবার উপরে মানুষ সত্য—চণ্ডীদাস
অপেক্ষাঃ সে আমা অপেক্ষা বুদ্ধিমান।
তরেঃ সকলের তরে সকলে আমরা।
বিনাঃ ‘দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কী মহীতে।

অনুসর্গ ও বিভক্তির মধ্যে পার্থক্য

অনুসর্গ ও বিভক্তির মধ্যে পার্থক্য হল-
অনুসর্গ বিভক্তি
1. অনুসর্গের নিজস্ব অর্থ আছে। যথা : দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক। 1. বিভক্তির নিজস্ব অর্থ নেই। যথা : তে, এ, য়, র ইত্যাদি।
2. আলাদাভাবে বসে। যথা : গাছ থেকে ফল পড়ে। 2. বিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। যথা :বনে বাঘ আছে।
3. অনুসর্গ শব্দের পূর্বেও বসে। যথা : বিনা স্বদেশি ভাষা মিটে কী আশা? 3. বিভক্তি শব্দের শেষে বসে। যথা : বৃষ্টিতে ভিজে গেল।
4. অনুসর্গ ক্রিয়ার কাল চিহ্নিত করতে পারে না।
যথা : রাম আপেক্ষা শ্যাম বড়াে।
4. বিভক্তি কারক ও ক্রিয়ার কাল চিহ্নিত করে।
যথা : রাম বনে গিয়েছিল।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url