সহমর্মিতা রচনা

সহমর্মিতা রচনা

ভূমিকা 

এই পৃথিবীতে মানুষরূপে জন্মলাভ করা এক দুর্লভ সৌভাগ্য। প্রকৃতি যেমন পত্র-পুষ্পে নানাভাবে ঋতুতে ঋতুতে নিজেকে বিকশিত করে। মানুষও তেমনি তার এই দুর্লভ জীবনকে নানা গুণে প্রস্ফূটিত করে। মানবমনে সহমর্মিতা এমনি একটি প্রস্ফূটিত কুসুম যা তাকে অন্যোন্য করে তুলে।

সহমর্মিতা কী?

দুঃখে-সুখে কারোর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়াই সহমর্মিতা। হৃদয়বৃত্তির এই কাজটি বেশ কঠিন। যতক্ষণ না দু'টি মানুষের চিন্তা-ভাবনা এবং হৃদয়াবেগ আ এক সূত্রে গাঁথা হয় ততক্ষণ সহমর্মিতা বোধ জাগা খুবই অসম্ভব। কারণ কারোর সুখে সকলে সুখী নাও হতে পারে। অন্যের সুখ দেখে মনে অপরের ঈর্ষা জাগতে পারে। অনুরূপ ভাবে অন্যের দুঃখে কেউ দুঃখ বোধ নাও করতে পারে। হয়ত সেজন্য কারোর মনে
আনন্দ হতে পারে। তাই একজন মানুষের সুখ বা দুঃখের সঙ্গে অন্য মানুষ বা অনেক মানুষ সহানুভূতিশীল হলেই সহমর্মিতাবোধ জাগে। মানবহৃদয়ের এটি একটি বিশিষ্ট গুণ।

অনুভূতি

সহমর্মিতাবোধ অনুভূতিবেদ্য। তাই এটি খুবই সূক্ষ্ম। একটি ঘরে যদি একই সুরে অনেক সেতারের তার বাঁধা থাকে তা হলে ঘরের যেকোনো একটি সেতারের তারে ঘা দিলে প্রত্যেক সেতার থেকে ঐ একই সুর বেজে উঠে। সহমর্মিতা ঠিক এই রকম। হৃদয়ের তার যদি এক সুখ বা দুঃখের তারে বাঁধা থাকে তা হলে তা বহু হৃদয়ে সম আঘাত করতে পারে। যখন সে ঘটনাটি ঘটে তখনই সহমর্মিতার বাতাবরণ তৈরি হয়। সে জন্যে এক শিশুহারা মায়ের বেদনা অনেক মায়ের মনকে বেদনাবিদ্ধ করে। এক জনের সন্তানের পাশের আনন্দ অন্য বহু মানুষের হৃদয়ে আনন্দের ঢেউ তোলে। সহমর্মিতাবোধ এমনি জিনিস।

উপসংহার

সহমর্মিতা মানবিক মূল্যবোধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মানুষের মনে যদি সহমর্মিতাবোধ না থাকে তাহলে সে মানুষ পশুর অধম। হৃদয়ের এই অসামান্য বোধকে সযত্নে প্রত্যেক মানুষকে লালিত পালিত করা উচিত। মর্মে মর্মে উপলব্ধিই তো সহমর্মিতা।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url