আমার প্রিয় খেলা ক্রিকেট রচনা

আমার প্রিয় খেলা ক্রিকেট রচনা

ভূমিকা

ক্রীড়াজগতে রাজা ক্রিকেট খেলা। এ খেলাটি আমাদের দেশের খেলা নয়। ইংরেজ আমলে ভারতে ক্রিকেট খেলার প্রচলন হয়। এই খেলা খুব ব্যয়সাধ্য। তাই ধনীর ছেলেদের পক্ষেই এই খেলায় অংশগ্রহণ সম্ভব। তবে আজকাল ক্রিকেটও সাধারণের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শীতের সময় ক্রিকেট খেলা হয়। এর প্রধান কারণ ক্রিকেট খেলা সারাদিন ধরে চলে বলে অন্য ঋতুতে এই খেলা সম্ভব নয়। তবে আজকাল প্রায় সব ঋতুতে ক্রিকেট খেলা হয়।

মাঠ

ক্রিকেট খেলার মাঠটি বেশ বড় আকৃতির। যে জায়গায় বলটি ব্যাট দিয়ে আঘাত করতে হয়, সেই জায়গাটি বেশ যত্ন সহকারে খেলার উপযোগী করে তৈরি করতে হয়। জায়গাটি লম্বায় চুয়াল্লিশ হাত। এর দুদিকে তিনটি করে স্ট্যাম্প বসান থাকে। ক্ষুদ্র এই খেলার স্থানটিকে পিচ বলে। খেলায় উভয় দলের এগারজন করে খেলোয়াড় থাকে। এদের মধ্যে বিভিন্ন খেলোয়াড় বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে থাকেন যেমন ব্যাটসম্যান, বোলার, উইকেটকীপার, ফিল্ডার ইত্যাদি। আবার এমন খেলোয়াড়ও আছেন যিনি সব বিভাগেই পটু। এরা ‘চৌকস’ খেলোয়াড় নামে পরিচিত হন। ক্রিকেট খেলোয়াড়দের দৈহিক সবলতা খুব বেশি প্রয়োজন। দ্রুত দৌড় এবং হাতের কবজির বিশেষ শক্তির দরকার হয়।

নিয়মকানুন

খেলার শুরুতে যে দল বল করে তাদের দুজন ব্যাট নিয়ে প্রথমে আসে। দলের অন্যরা তাঁবুতে অপেক্ষা করে। বিপক্ষের সবাইকে এ সময় মাঠে নামতে হয়—কেউ বল দেয়, কেউ উইকেট রক্ষা করে। অন্যেরা দলপতির নির্দেশে পিচের বাইরের প্রশস্ত মাঠে নিজ নিজ স্থান দখল করে। যিনি বল দেন তাঁকে বোলার বলে। বোলার সাধারণতঃ এক নাগাড়ে ছয়বার বল ছোঁড়েন। ব্যাটসম্যানেরা সেই বল ব্যাট দিয়ে আঘাত করে দূরে পাঠিয়ে বোলার বা উইকেট রক্ষকের হাতে আসার আগে দৌড়ায়। ঐ একবারের দৌড়ে এক রান। ব্যাটসম্যান যতবার দৌড়ায় দলের পক্ষ তত রান যোগ হয়। বল মারার সময় যদি কোন বল মাটি ছোঁয়ার আগে বিপক্ষের কোন ফিল্ডার লুফে নেয় তবে যে ব্যাটসম্যান বলটি মেরেছিল সে আউট হয়। দৌড় দেওয়ার সময় জোরে পাঠান বল ছুঁড়ে যদি স্ট্যাম্পে লাগান যায় তখনও ব্যাটসম্যান বা তার সহযোগী আউট হয়ে যান। আরও বিভিন্ন কৌশলেও ব্যাটসম্যান আউট হন। বোলার বল হাতে নিলে ব্যাটসম্যান আর দৌড়তে পারে না। ব্যোলিং ব্যাটিং নির্ভর করে পিচের উপর। বোলারের বল ছোঁড়ার বিভিন্ন কৌশলেরও বিভিন্ন নাম আছে। এই খেলার নিয়মকানুনও খুব সুনিয়ন্ত্রিত। যে দল বেশি রান সংগ্রহ করে সে দল বিজয়ী হয়। রান সংগ্রহের আরও কয়েকটি নিয়ম আছে। তাদের মধ্যে যে ব্যাটসম্যানের বল মাটির উপর দিয়ে সকলের বাধা অতিক্রম করে নির্দিষ্ট সীমানারা বাইরে চলে যায়—সে বলকে ওভার বাউন্ডারি বলে, এতে একেবারে ছয়টি রান সংগ্রহ হয়। আর যে বল মাটি ছুঁয়ে বা মাটি দিয়ে গড়াতে গড়াতে সীমানা পার হয় তাকে বাউণ্ডারি বলে, এতে একেবারে চারটি রান হয়।

উপসংহার

ক্রিকেট খেলায় ধৈর্য এবং চোখের তীক্ষ্ণতা খুব বেশি প্রয়োজন। এই ক্রিকেট খেলা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে খুব প্রসিদ্ধ। বিদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক খেলাকে টেস্ট ম্যাচ বলে। জয়-পরাজয় নির্ধারণের জন্য পাঁচটি করে টেস্ট খেলা হয়। আজকাল এক দিনের ক্রিকেট ম্যাচ চালু হয়েছে। অষ্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইণ্ডিজ, ভারত, ইংল্যাণ্ড প্রভৃতি আন্তর্জাতিক দল ক্রিকেটে বিশেষ প্রসিদ্ধ।

এই প্রবন্ধের সাহায্যে লেখা যায়
ক্রিকেট খেলার নিয়মকানুন।
ক্রিকেট খেলার বিবরণ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url