আহ্নিক গতির ফলাফল লেখাে।

আহ্নিক গতির ফলাফল
আহ্নিক গতির ফলাফল লেখাে।
উত্তরঃ পৃথিবী তার নিজের মেরুদণ্ডের উপর অনবরত ঘুরে চলেছে। পৃথিবীর নিজেকে একবার ঘুরতে বা পাক খেতে সময় লাগে ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড। এই গতিকে আহ্নিক গতি বলে। আহ্নিক গতির ফলাফল নিম্নরূপ-
(i) দিন-রাত্রি সংগঠিত।
(ii) সূর্যের উদয় এবং সূর্য অস্ত যাওয়া।
(iii) সময় নির্ণয় করা যায়।
(iv) সমুদ্রে জোয়ার-ভাটা হয়।
(v) বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রস্রোতের গতির দিক নির্ণয়
(vi) পৃথিবীতে জীবের সৃষ্টি হয়।
(i) দিনরাত্রি সংগঠিতঃ পৃথিবীর কোনাে আলাে নেই, সূর্যের আলােয় আলােকিত। পৃথিবী আবর্তন করার সময় সূর্যের আলাে পৃথিবীর যে অংশে এসে পড়ে সেই অংশে দিন ও বিপরীত অংশে রাত্রি হয়।
(ii) সূর্য উদয় এবং সূর্য অস্ত যাওয়াঃ পৃথিবী পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করে। তাই সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে ও পশ্চিম দিকে অস্ত যায়।
(iii) সময় নির্ণয় করা যায়ঃ পৃথিবীর এক পাক ঘুরতে সময় লাগে ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড বা প্রায় ২৪ ঘণ্টা। ১ ঘণ্টাকে ৬০ মিনিটে এবং ১ মিনিটকে ৬০ সেকেন্ডে ভাগ করে সময় নির্ণয় করা হয়।
(iv) সমুদ্রে জোয়ার-ভাটা হয়ঃ পৃথিবী সূর্যের গ্রহ আবার চাঁদ পৃথিবীর উপগ্রহ। এখন চাঁদ এবং সূর্য উভয় পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। চাঁদ পৃথিবীর কাছে আছে, তাই চাঁদের আকর্ষণের প্রভাব সূর্য অপেক্ষা বেশি। আবর্তনের সময় পৃথিবীর যে স্থান চাঁদের সামনে আসে সেই স্থানের জলভাগ ফুলে ওঠে। একে জোয়ার বলে আর ওই স্থানের সমকোণে অবস্থিত স্থানে ভাটা হয়। তাহলে দেখা যায় পৃথিবীর আবর্তন না হলে শুধু এক জায়গাতেই জোয়ার-ভাটা হত।

(v) বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রস্রোতের গতির দিক নির্ণয়ঃ পৃথিবীর নিরক্ষরেখা থেকে দুই মেরুর দিকে পরিধি ক্রমশ কমতে থাকে।নিরক্ষরেখাতে আবর্তনের গতিবেগ সবচেয়ে বেশি এবং দুই মেরুর দিকে গতিবেগ ক্রমশ কমতে থাকে। আবর্তনের বেগের পার্থক্যের জন্য বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি গতিশীল পদার্থগুলাে উত্তর গােলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গােলার্ধে বামদিকে বেঁকে যায়। এই সূত্রটি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী ফেরেল।
(vi) পৃথিবীতে জীবের সৃষ্টি হয়ঃ সমস্ত পৃথিবীই আবর্তন গতির ফলে সূর্যের পর্যাপ্ত উষ্ণতা এবং আলাে পায়। আবর্তন গতি যদি না থাকত তাহলে পৃথিবীর একাংশ সর্বদাই আলােকিত ও উত্তপ্ত হত এবং বিপরীত দিকে সর্বদাই অন্ধকার থাকত। জীবের সৃষ্টি হত না।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url