জীবাশ্ম কাকে বলে ? জীব বিবর্তনে জীবাশ্মের ভূমিকা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করাে।

জীবাশ্ম কাকে বলে ? জীব বিবর্তনে জীবাশ্মের ভূমিকা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করাে।
জীবাশ্ম কাকে বলে ?
উত্তর: জীবাশ্ম ও পাললিক শিলাস্তরে আবদ্ধ প্রাগৈতিহাসিক যুগের জীবগুলির দেহের সম্পূর্ণ বা আংশিক প্রস্তরীভূত অবশেষ বা ছাপকে জীবাশ্ম বলে।
উদাহরণস্বরূপ আর্কিওপটেরিক্স একটি জীবাশ্ম।
জীব বিবর্তনে জীবাশ্মের ভূমিকা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর: জীবাশ্মকে অভিব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ দলিল বলা হয়, যেগুলি প্রকৃতির খেয়ালেই অযত্নে সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়।
বিভিন্ন যুগের জীবাশ্মগুলি পর্যালােচনা করলে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি পাওয়া যায়।
(i) জীবাশ্মগুলিকে ভালােভাবে পর্যালােচনা করলে সেই সময়ের পৃথিবী পারিপার্শ্বিক অবস্থা, আবহাওয়া ও সেই যুগের জীবগুলির সম্বন্ধে জানা যায়। এর থেকে আমরা প্রমাণ করতে পারি যে আধুনিক জীব কোনাে বিচ্ছিন্নভাবে পৃথিবীর
আসেনি বরং বহুকাল ধরে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই এইসব জীবের সৃষ্টি হয়েছে।
(ii) জীবাশ্মগুলি একটি নির্দিষ্ট নিয়মে সঞ্জিত হয়। ভূস্তরের নীচের দির প্রাচীনতর ও উপরের দিকে ক্রমশ আধুনিক জীবাশ্মগুলিকে পাওয়া যায়। এই প্রাচীনতর জীবাশ্মগুলি সাধারণত সরলতর বা আদিম জীবের জীবাশ্ম। উন্নতত জীবগুলির জীবাশ্ম উপরের স্তরে পাওয়া যায়। এর থেকে পর্যায়ক্রমিক আলােচনার মাধ্যমে জীবজগতের ক্রমবিবর্তনের পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায়।
(iii) বর্তমানে কার্বন পদ্ধতি বা ইউরেনিয়াম-থােরিয়াম পদ্ধতির মাধ্যমে জীবাশ্মের প্রায় সঠিক বয়স নির্ধারণ করা যায়। এর ফলে পৃথিবীর কোন্ যুগে কী কী জীব ছিল তার সুস্পষ্ট ধারণা করা যায়।
(iv) মিসিং লিঙ্কগুলি অভিব্যক্তির ধারাকে বুঝতে বিশেষ সাহায্য করে। এগুলি দুটি ভিন্ন পর্যায়ের হয়। কাজেই এগুলির মাধ্যমে বিবর্তন বুঝতে সুবিধা হয়।যেমন, আর্কিওপটেরিক্স নামক প্রাগৈতিহাসিক পাখির জীবাশ্ম পক্ষী ও সরীসৃপ
উভয়ের মিলিত বৈশিষ্ট্য বহন করে। এর থেকে বােঝা যায় যে সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী থেকেই পাখিদের উদ্ভব হয়। রাইনিয়া ফার্নের জীবাশ্ম প্রমাণ করে যে মস জাতীয় উদ্ভিদ থেকে ফার্ন বর্গের উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়েছে।
(v) কোনাে একটি নির্দিষ্ট প্রাণীর অভিব্যক্তির ক্ষেত্রেও জীবাশ্মগুলি বিশেষ ভূমিকা নেয়। ইয়ােহিপ্পাস, মেরিচিগ্লাস থেকে বর্তমান ঘােড়া ইকুয়াসের উৎপত্তির ইতিহাস জানা যায়। একইভাবে মায়েরিথেরিয়াম থেকে বর্তমান হাতি এলিফাসের উৎপত্তির বিবরণ পাওয়া যায়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url