মানুষের বৃদ্ধির কয়েকটি দশা
উঃ জন্মের পর শিশু প্রাণী ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং প্রাপ্তবয়স্কে পরিণত হয়। প্রাপ্তবয়স্কের পর প্রাণিদের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে প্রাণীর বার্ধক্য দশা আসে এবং নির্দিষ্ট সময়ে প্রাণীর মৃত্যু ঘটে।
শারীরবৃত্তীয়ভাবে মানুষের বৃদ্ধির কয়েকটি দশা আছে, এগুলি হল যথাক্রমে : (i) শৈশবকাল, (ii) কৈশােরকাল, (iii) প্রাপ্তবয়স্কতা প্রাপ্তি এবং (iv) বার্ধক্য দশা।
নীচে এইসব দশার উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলােচনা করা হল :
(i) শৈশবকাল (Childhood) : জন্মের পর থেকে 10-13 বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের শৈশবকাল বা বাল্যকাল। এই সময় বৃদ্ধি মােটামুটি ধীরগতিতে হতে থাকে। থাইমাস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত থাইমােসিন হরমােন, প্রধানত এই বয়সের বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে। শৈশবকালের শেষের দিকে (10-13 বছর বয়সে) থাইরক্সিন, সােমাটোট্রফিক হরমােন (STH) ইত্যাদির ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়, ফলে এই সময় থেকেই বৃদ্ধির হার বাড়তে থাকে।
(ii) কৈশােরকাল (Puberty stage) : 14 থেকে 18 বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের কৈশাের দশা। এই সময় বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশী। বলা যেতে পারে এই সময়কালেই মানুষের মুখ্য বৃদ্ধিকাল। এই সময় পিটুইটারি নিঃসৃত হরমােনগুলির সক্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেহের অন্যান্য অনাল গ্রন্থিগুলির সক্রিয়তাও বেড়ে যায়। ফলে দেহের সর্বাঙ্গীণ ও সুসামঞ্জস বৃদ্ধি হতে দেখা যায়। এই সময় পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমােনের ক্রিয়ায় এবং স্ত্রীদের ইস্ট্রোজেন ও প্রােজেস্টেরন হরমােনের ক্রিয়ায় দেহে গৌণ যৌন লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং যৌনাঙ্গের বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। ফলে কিশাের-কিশােরীরা দ্রুত প্রাপ্তবয়স্কের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
(iii) প্রাপ্তবয়স্কতা (Adult stage) : 18 বছর বয়সের পর মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয়, অর্থাৎ তাদের যৌনাঙ্গের পূর্ণ বিকাশ ঘটে। যৌন গ্রন্থিগুলি পরিপূর্ণভাবে সক্রিয় হয়। পুরুষদের শুক্রাশয়ে শুক্রাণু এবং স্ত্রীদের ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু সৃষ্টি হয়। 18 বছরের পর বৃদ্ধির হার কমে আসে এবং 22-23 বছরের পর মানুষের দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
(iv) বার্ধক্য (Menopause) : স্ত্রী দেহের ক্ষেত্রে 45 বছর বয়সের পর এবং পুরুষ দেহের ক্ষেত্রে 55 বছর বয়সের পর তাদের ডিম্বাণু ও শুক্রাণু উৎপাদন ক্রিয়ার হ্রাস ঘটে, ফলে প্রজনন ক্ষমতা লােপ পেতে থাকে এবং মানুষের বার্ধক্য দশা শুরু হয়।
Ok
ReplyDelete