সন্ধান কাকে বলে? কোহল সন্ধান কাকে বলে এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধান কাকে বলে?

সন্ধান কাকে বলে? কোহল সন্ধান কাকে বলে এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধান কাকে বলে?

সন্ধান কাকে বলে?
যে জৈবনিক প্রক্রিয়ায় অবায়ুজীবী জীবকোশে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে শ্বসন বস্তু বিশেষ উৎসেচকের প্রভাবে আংশিকভাবে জারিত হয়ে শক্তির আংশিক মুক্তি ঘটায় এবং উপজাত বস্তুরূপে ইথাইল অ্যালকোহল বা ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে, ফলে দ্রবণটি গেজে ওঠে, তাকে সন্ধান বলে।
1857 সালে লুই পাস্তুর (Louis Pasteur ) প্রথম সন্ধান প্রক্রিয়ার বিশদ ব্যাখ্যা দেন। উৎপন্ন পদার্থের ওপর নির্ভর করে সন্ধান প্রক্রিয়াকে কয়েকভাগে ভাগ করা যায় যথা- 
(1) কোহল সন্ধান
(2) ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধান।
কোহল সন্ধান কাকে বলে?
যে সন্ধান প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ ইস্ট নিঃসৃত জাইমেজ উৎসেচকের প্রভাবে অক্সিজেন ছাড়াই আংশিক জারিত হয়ে ইথাইল অ্যালকোহল, কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং অল্প পরিমাণ শক্তি নির্গত করে তাকে কোহল সন্ধান বলে।
কোহল সন্ধানের স্থান
খেজুর বা তালের রসে ইস্ট (ছত্রাক) দিলে কোহল সন্ধান ঘটে। খেজুর রসের মধ্যস্থ গ্লুকোজকে ইস্ট কোশ শোষণ করে নেয়। তারপর ইস্টের ভিতরে গ্লুকোজ জাইমেজ উৎসেচকের সাহায্যে জারিত হয়ে ইথাইল অ্যালকোহল এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন করে। এই CO₂ এবং ইথাইল অ্যালকোহল ইস্ট কোশরস থেকে বেরিয়ে আসে ফলে দ্রবণটি
গেজে ওঠে।
কোহল সন্ধানের রাসায়নিক সমীকরণ
                উৎসেচক
C₆H₁₂O₆--------------------> 2C₂H₅OH + 2CO₂+50 Kcal
                জাইমেজ         ইথাইল অ্যালকোহল

ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধান কাকে বলে?
যে সন্ধান প্রক্রিয়ায় শ্বসন বস্তু অক্সিজেন ছাড়াই জারিত হয়ে ল্যাকটিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে এবং আংশিক শক্তি (36 Kcal) উৎপন্ন হয় তাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধান বলে।
উদাহরণঃ (i) প্রাণীর পেশিকোশে সঞ্চিত গ্লাইকোজেনের গ্লুকোজ অণু , এর অনুপস্থিতিতে কয়েক প্রকার উৎসেচকের সাহায্যে গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় জারিত হয়ে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করে।
              উৎসেচক                    ডিহাইড্রোজিনেজ
C₆H₁₂O₆ ------------- 2CH₃COCOOH -------------> 2CH₃CH(OH)COOH + 36 Kcal

ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধানে উৎপন্ন পদার্থঃ কোহল সন্ধানে ইথাইল অ্যালকোহল, কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং 50 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয়। অপরপক্ষে ল্যাকটিক অ্যাসিড সন্ধানে ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং 36 Kcal শক্তি উৎপন্ন হয়।
পেশির ক্লান্তি কাকে বলে?
বা
পেশীর ক্লান্তি হয় কেন?
অনেকক্ষণ ধরে ব্যায়াম, বা ছােটাছুটি করলে পেশি মধ্যস্থ গ্লাইকোজেন সন্ধান প্রক্রিয়ায় ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করে। এই ল্যাকটিক অ্যাসিড পেশির ক্লান্তির জন্য দায়ী। ক্লান্ত হলে পেশি অবসন্ন হয়ে পড়ে, এবং সংকোচন ক্ষমতা সাময়িকভাবে নষ্ট হয়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে ল্যাকটিক অ্যাসিড দূরীভূত হয় ফলে পেশির ক্লান্তি দূর হয়।
পেশির ক্লান্তির জন্য দায়ী কোন এসিড?
উঃ ল্যাকটিক অ্যাসিড।
 আরো পড়ুন-
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url