আফ্রিকা মহাদেশের অবস্থান ও ভৌগােলিক গুরুত্ব আলােচনা করাে।

আফ্রিকা মহাদেশের অবস্থান ও ভৌগােলিক গুরুত্ব

আফ্রিকা মহাদেশের অবস্থান ও ভৌগােলিক গুরুত্ব আলােচনা করাে।
উত্তরঃ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ আফ্রিকা মহাদেশ মহাদেশটিতে পাহাড়, পর্বত, মালভূমি, মরুভূমি, নদনদী, স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও সংস্কৃতি বৈচিত্র্যে ভরিয়ে তুলেছে।
অবস্থানঃ আফ্রিকা মহাদেশ ইউরােপের দক্ষিণে এবং এশিয়ার পশ্চিমে অবস্থিত। 37°20' উত্তর অক্ষাংশ থেকে 35° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং 51°24' পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে 17°33' পশ্চিম দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত। মূলমধ্যরেখা, নিরক্ষরেখা, কর্কটক্রান্তি রেখা এই মহাদেশের ওপর বিস্তৃত।
আয়তন : আফ্রিকা মহাদেশের আয়তন 3 কোটি 4 লক্ষ 20 হাজার বর্গ কিলােমিটার। উত্তর-দক্ষিণে প্রায় 8000 কিলােমিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় 7350 কিলােমিটার বিস্তৃত।
সীমাঃ আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরে ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পূর্বে লােহিত সাগর ও ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থান করেছে।
জিব্রাল্টার প্রণালী, ইউরােপ থেকে এবং সুয়েজ খাল এশিয়া মহাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।
ভূপ্রকৃতিঃ বন্ধুর প্রকৃতি, প্রাচীন শিলায় গড়া এক বিশাল ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমি। উপকূলবর্তী অঞ্চল নীচু সমতলভূমি, মালভূমি অঞ্চল উত্তরের থেকে দক্ষিণে পূর্ব বেশি উঁচু।
জলবায়ুঃ এখানকার জলবায়ু শুষ্ক, উষ্ণ এবং চরম প্রকৃতির। দিনে যেমন গরম, রাতে তেমন ঠাণ্ড, পৃথিবীর উষ্ণতম মহাদেশ এই মহাদেশকেই বলে।
কৃষিকাজঃ প্রতিকূল জলবায়ুর জন্য কৃষিকাজ তেমন সমৃদ্ধি লাভ করেনি, তবে তুলাে, যব, ভুট্টা, খেজুর এখানে জন্মায়। সমগ্র জমির ১০ শতাংশ জমিতে কৃষিকাজ হয়ে থাকে।
স্বাভাবিক উদ্ভিদঃ বিবিধ প্রকারের স্বাভাবিক উদ্ভিদ এখানে জন্মায়, কারণ জলবায়ু এবং মৃত্তিকা বিভিন্ন স্বাভাবিক উদ্ভিদ জন্মানাের উপযােগী। শাল, সেগুন, রােজউড, মেহগনি প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য স্বাভাবিক উদ্ভিদ। আফ্রিকার স্বাভাবিক উদ্ভিদকে ছয় ভাগে ভাগ করা হয়।
যথা- ক্রান্তীয় বৃষ্টি বনভূমি, ক্রান্তীয় পর্ণমােচী বনভূমি, সাভানা বনভূমি, মরু বনভূমি, ভূমধ্যসাগরীয় বনভূমি ও পার্বত্য অঞ্চল বনভূমি।
জীবজন্তুঃ সু-বিস্তৃত বনাঞ্চলের জন্য এখানে বিভিন্ন প্রকারের জীবজন্তু দেখা যায়। যেমন—বাঘ, সিংহ, গেরিলা, বানর, হাতি, শিম্পাঞ্জি, নানা ধরনের পাখি, বিভিন্ন ধরনের বিষধর সাপ।
খনিজ সম্পদঃ এখানে হীরে, সােনা, প্লাটিনাম, কোবাল্ট, তামা, ইউরেনিয়াম, বক্সাইট প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। তবে কয়লা ও লৌহ আকরিক বিশেষ না পাওয়ায় শিল্পের তেমন বিকাশ দেখা যায় না। ইউরেনিয়াম উত্তোলনে আফ্রিকা মহাদেশ প্রথম।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url