দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ভৌগােলিক গুরুত্ব

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ভৌগােলিক গুরুত্ব লেখাে।

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ভৌগোলিক গুরুত্ব

উত্তরঃ দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তরাংশ চওড়া এবং নিম্নভাগ ক্রমশ সরু হয়ে গেছে। এখানে পর্বতশ্রেণি ও পার্বত্য ভূভাগ, ক্ষয়জাত উচ্চভূমি এবং সমতলভূমি দেখা যায়। অর্থনৈতিক দিক থেকে দক্ষিণ আমেরিকা বিশেষ উন্নতিলাভ করেনি।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের জলবায়ু : দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে অধিকাংশ জায়গা মকরক্রান্তি রেখার উত্তরে অবস্থিত। এই কারণে এই মহাদেশ উষ্ণমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত। তাই উষ্ণ জলবায়ুর প্রভাব বেশি। অধিকাংশ এলাকায় বনভূমি দেখা গেলেও মাঝেমধ্যে, মরুভূমিও দেখা যায়। আবার মকরক্রান্তি রেখার দক্ষিণাংশ নাতিশীতােষ্ণ জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত। এই জলবায়ু মণ্ডলে আছে বিস্তীর্ণ তৃণভূমি অঞল যা পম্পাস নামে পরিচিত।

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বনজ সম্পদ : দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর অংশের কিছুটা অঞ্চল নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। ফলে সেলভা নামে পরিচিত বিশাল বনভূমি গড়ে উঠেছে। এখানে চিরহিরৎ বৃক্ষ জন্মালেও অস্বাস্থ্যকর আবহাওয়ার জন্য বিষাক্ত কীটপতঙ্গের উপদ্রব দেখা যায়। ওই কীটপতঙ্গ বনজ সম্পদকে নষ্ট করে। রবারের আদি জন্মস্থান এখানে। ক্যাম্পােস ও পম্পাস তৃণভূমিতে পশুচারণ দেখা যায়।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের কৃষি ও প্রাণী সম্পদ : প্রতিকূল জলবায়ু ও ভূপ্রকৃতির জন্য কৃষিকাজের সমৃদ্ধি ঘটেনি। নদী উপত্যকা ও উপকূলবর্তী অঞ্চলে কৃষিকাজ হয়ে থাকে ভুট্টা, গম, কফি, কোকো, রবার, তামাক, আখ, ধান, জই ও সিঙ্কোনার চাষ, হয়। কফি ও কোকো এখানকার কৃষিজ ফসলের মধ্যে প্রধান। বিশাল তৃণভূমি অঞ্চলের জন্য পশুপালন এখানকার দ্বিতীয় উপজীবিকা। আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের পম্পাস তৃণভূমিতে, ক্যাম্পােস তৃণভূমিতে গবাদি
পশুপালন করা হয়। এই মহাদেশ গােরু, ভেড়া পালনে ও মাংস রপ্তানিতে পৃথিবীর মধ্যে প্রথম স্থানের অধিকারী।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের শিল্প সম্পদ : কয়লা এখানে বিশেষ দেখা যায় না। কয়লার অভাবে। এখানে শিল্পেরও বিশেষ প্রকাশ পায়নি। বর্তমানে প্রযুক্তিবিদ্যার সহায়তায় লৌহ-ইস্পাত শিল্প, চিনি শিল্প, কার্পাস বয়ন শিল্প প্রভৃতি গড়ে উঠেছে। দুধ মাংসের জন্য টিন জাতীয় কারখানা স্থাপন হয়েছে এবং বাণিজ্যে উন্নতি শুরু হওয়ায় অবস্থানজনিত অসুবিধা কাটিয়ে উঠবার চেষ্টা চলছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url