তড়িৎ চুম্বক কি? তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার লেখ ও তড়িৎ চুম্বক কিভাবে তৈরি করা হয়?
তড়িৎ চুম্বক কি? তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার লেখ ও তড়িৎ চুম্বক কিভাবে তৈরি করা হয়?
উঃ সলিনয়েডে সমমুখী তড়িৎপ্রবাহ (DC) পাঠিয়ে উৎপন্ন চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে চৌম্বক পদার্থকে অস্থায়ী চুম্বকে পরিণত করলে ওই চুম্বকে তড়িৎচুম্বক বলে।
তড়িৎ চুম্বক কে আবিষ্কার করেন?
উঃ ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী উইলিয়াম স্টারজন (William Sturgeon)
তড়িৎ চুম্বক কিভাবে তৈরি করা হয় ?
উত্তরঃ তড়িৎচুম্বক প্রস্তুত প্রণালী : একটি পিচবাের্ডের নলের উপরে সরু অন্তরিত তামার তারের বহুসংখ্যক পাক দিয়ে ওই তারের প্রান্তদ্বয় ব্যাটারির দুই মেরুর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। নলের মধ্যে নরম লােহার দণ্ড রেখে ব্যাটারির সাহায্যে কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে ওই লৌহদণ্ড চুম্বকে পরিণত হবে এবং যতক্ষণ তড়িৎপ্রবাহ চলে ততক্ষণই এর চুম্বকত্ব বজায় থাকবে।
তড়িৎ চুম্বকের শক্তি কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়?
কুণ্ডলীর তারের পাকসংখ্যা বৃদ্ধি করে তড়িৎ প্রবাহমাত্রা বৃদ্ধি করে তড়িৎচুম্বকের শক্তি বৃদ্ধি করা যায়। কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখের উপর ওই চুম্বকের মেরুর প্রকৃতি নির্ভর করে। কুণ্ডলীর যে প্রান্তে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ ঘড়ির কাটার ঘূর্ণনের অভিমুখের বিপরীত দিকে সেই প্রান্তে উত্তর মেরু এবং অপর প্রান্তে দক্ষিণ মেরু উৎপন্ন হয়।
তড়িৎচুম্বকের শক্তি পাকসংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং প্রবাহমাত্রা বৃদ্ধি করে বাড়ানাে যায় ঠিকই, কিন্তু যত ইচ্ছা ওই শক্তি বাড়ানাে যায় না। চুম্বকের শক্তি বৃদ্ধি পেতে পেতে যখন চৌম্বক পদার্থের সমস্ত অণুই মুক্ত শৃঙ্খলে সজ্জিত হয়ে পড়ে তখন চৌম্বক সম্পৃক্তিতে পৌছায়। এরপর আর কোনােভাবেই ওই চুম্বকের শক্তি বৃদ্ধি করানাে যায় না।
তড়িৎ চুম্বকের মেরু শক্তি কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে?
উঃ তড়িৎ-চুম্বকের মেরুর শক্তি (1) তড়িৎ প্রবাহের মাত্রা, (2) সলেনয়েডে পরিবাহী-তারের পাকের সংখ্যা, (3) সলেনয়েডের মজ্জার উপাদান ও আকৃতি এবং (4) সলেনয়েডের দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে।
তড়িৎ চুম্বকের মেরু নির্ণয়
তড়িৎ-চুম্বকের কোন্ প্রান্তে কী মেরুর সৃষ্টি হবে, তা পরিবাহীর তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখের উপর নির্ভর করে। কোনাে প্রান্ত থেকে তড়িৎ-চুম্বকের অক্ষ বরাবর তাকালে যদি সলেনয়েডের ঐ মুখে তড়িৎ-প্রবাহ দক্ষিণাবর্তী (clockwise) বলে মনে হয়, তবে ঐ প্রান্তটিতে দক্ষিণ মেরু (S) এবং প্রবাহমাত্রায় অভিমুখ বামাবর্তী (anti-clockwise) মনে হলে ঐ প্রান্তটিতে উত্তর মেরুর (N) সৃষ্টি হয়।
তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার
তড়িৎ চুম্বকের ব্যবহার গুলি হল-
(i) টেলিগ্রাফ এবং টেলিফোন যন্ত্রে তড়িৎ-চুম্বক ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত ব্যবহার করা হয়;
(ii) চোখে লােহার গুড়াে তড়িৎপ্রবাহ তড়িৎপ্রবাহ পড়লে তা বার করতে ডাক্তারেরা সূক্ষ্মাগ্র মেরুযুক্ত তড়িৎ-চুম্বকের মেরু নির্ণয় তড়িৎ-চুম্বক ব্যবহার করে থাকেন;
(iii) বৈদ্যুতিক ক্রেন, বৈদ্যুতিক ঘন্টা, মােটর, ডায়নামো প্রভৃতি যন্ত্রে তড়িৎ-চুম্বক ব্যবহার করা হয়;
(iv) কলকারখানায় লােহার ভারী বস্তুকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাতে তড়িৎ-চুম্বক ব্যবহার করা হয়।
আরো দেখুন-